মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

প্রশ্ন: সহিহ হাদিসে সুস্পষ্টভাবে এসেছে যে, নামায ত্যাগকারী কাফের। আমরা যদি হাদিসের বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ করি তাহলে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ত্যাগকারীকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য যাবতীয় অধিকার থেকে বঞ্ছিত করা, তাদের জন্য বিশেষ গোরস্তান নির্ধারণ করা, তাদের জানাযার নামায না-পড়া ও সালাম না-দেওয়া ওয়াজিব। যেহেতু কাফেরের নিরাপত্তা ও সালাম পাওয়ার অধিকার নেই। আমরা জানি যে, আমরা যদি নামাযীদের একটা পরিসংখ্যান প্রস্তুত করি তাহলে দেখা যাবে মুসলিম ও অমুসলিম পুরুষদের মধ্যে নামাযীর সংখ্যা ৬% এর বেশি হবে না। নারীদের মধ্যে এ সংখ্যা আরও কম হবে। এক্ষেত্রে শরিয়তের হুকুম কি? নামায ত্যাগকারীকে সালাম দেওয়া ও সালামের জবাব দেওয়ার হুকু

কোন মন্তব্য নেই:

 

উত্তর:

 

আলহামদুলিল্লাহ।

 

মুসলমানদের মধ্যে যে ব্যক্তি নামায ফরয হওয়াকে অস্বীকার করে না, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ত্যাগ করে তার হুকুমের ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। কারো কারো মতে, এমন ব্যক্তি কাফের; তাকে মুসলিম মিল্লাত ত্যাগকারী ‘মুরতাদ’ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং তিনদিনের মধ্যে তওবা করার জন্য আহ্বান জানানো হবে। তিনদিনের মধ্যে তওবা না করলে তাকে ‘মুরতাদ’ হওয়ার অপরাধে হত্যা করা হবে। তার জানাযা নামায পড়া হবে না। মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা হবে না। জীবিত বা মৃত কোন অবস্থায় তাকে সালাম দেওয়া হবে না এবং তার সালামের জবাব দেওয়া হবে না। তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হবে না, আল্লাহর রহমত কামনা করা হবে না। সে কারো থেকে উত্তরাধিকার সম্পত্তি পাবে না এবং তার থেকেও কেউ উত্তরাধিকার সম্পত্তি পাবে না। বরং তার সম্পত্তি বায়তুল মালের ফান্ডে বাজেয়াপ্ত করা হবে।

 

 নামায ত্যাগকারীদের সংখ্যা বেশি হোক কিংবা কম হোক; সংখ্যার কম-বেশি হওয়ার কারণে হুকুমের কোন তারতম্য হবে না।এ অভিমতটি অধিক শুদ্ধ ও দলিলের দিক থেকে অধিক অগ্রগণ্য। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী হচ্ছে- ““আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো নামাযের। সুতরাং যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করল, সে কুফরি করল।”[মুসনাদে আহমাদ ও সুনান গ্রন্থসমূহে সহিহ সনদে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে]

 

হাদিসে আরও এসেছে- “কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শির্‌ক ও কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে সালাত বর্জন।”[সহিহ মুসলিম]জমহুর আলেম (অধিকাংশ মাযহাবের আলেমগণ) বলেন: যদি কেউ নামায ফরয হওয়াকে অস্বীকার করে তাহলে সে ব্যক্তি কাফের ও ইসলাম ত্যাগকারী মুরতাদ। ইতিপূর্বে প্রথম অভিমতে বিস্তারিতভাবে যেসব হুকুম-আহকাম উল্লেখ করা হয়েছে সেসব হুকুম এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে পুরোপুরিভাবে প্রযোজ্য। আর যদি সে ব্যক্তি নামায ফরয হওয়াকে অস্বীকার না করে, কিন্তু অলসতাবশতঃ নামায ত্যাগ করে তাহলে সে ব্যক্তি কবিরা গুনাহগার। তবে সে মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ হয়ে যাবে না। তাকে তিনদিনের মধ্যে তওবা করার আহ্বান জানানো ফরয হবে। সে এ আহ্বানে সাড়া দিলে, আলহামদুলিল্লাহ। 

 

আর সাড়া না দিলে তাকে নামায বর্জনের শাস্তি হিসেবে হত্যা করা হবে; কাফের হিসেবে নয়। হত্যার পর এ ব্যক্তিকে গোসল দেয়া হবে, কাফন পরানো হবে, তার জানাযা নামায পড়া হবে, তার জন্য ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করা হবে, মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা হবে, সে উত্তরাধিকার সম্পত্তি পাবে এবং তার থেকেও অন্যেরা উত্তরাধিকার সম্পত্তি পাবে। সারকথা হলো, জীবিত বা মৃত একজন গুনাহগার মুসলমানের যাবতীয় বিধি-বিধান সে ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

প্রশ্ন: বিধর্মীদের উৎসব উপলক্ষে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোর বিধান কি?

কোন মন্তব্য নেই:

 

ছবি: সৌজন্যে গুগল

আলহামদুলিল্লাহ।

 

খ্রিস্টমাস (বড়দিন) কিংবা অন্য কোন বিধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কাফেরদের শুভেচ্ছা জানানো আলেমদের সর্বসম্মত মতানুযায়ী হারাম।

 ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) তাঁর লিখিত “আহকামু আহলিয যিম্মাহ” গ্রন্থে এ বিধানটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন: “কোন কুফরী আচারানুষ্ঠান উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। 

যেমন- তাদের উৎসব ও উপবাস পালন উপলক্ষে বলা যে, ‘তোমাদের উৎসব শুভ হোক’ কিংবা ‘তোমার উৎসব উপভোগ্য হোক’ কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন কথা। যদি এ শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করা কুফরীর পর্যায়ে নাও পৌঁছে; তবে এটি হারামের অন্তর্ভুক্ত। এ শুভেচ্ছা ক্রুশকে সেজদা দেয়ার কারণে কাউকে অভিনন্দন জানানোর পর্যায়ভুক্ত। বরং আল্লাহর কাছে এটি আরও বেশি জঘন্য গুনাহ। এটি মদ্যপান, হত্যা ও যিনা ইত্যাদির মত অপরাধের জন্য কাউকে অভিনন্দন জানানোর চেয়ে মারাত্মক। যাদের কাছে ইসলামের যথাযথ মর্যাদা নেই তাদের অনেকে এ গুনাতে লিপ্ত হয়ে পড়ে; অথচ তারা এ গুনাহের কদর্যতা উপলব্ধি করে না। যে ব্যক্তি কোন গুনার কাজ কিংবা বিদআত কিংবা কুফরী কর্মের প্রেক্ষিতে কাউকে অভিনন্দন জানায় সে নিজেকে আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির সম্মুখীন করে।”[উদ্ধৃতি সমাপ্ত]কাফেরদের উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হারাম ও এত জঘন্য গুনাহ (যেমনটি ইবনুল কাইয়্যেম এর ভাষ্যে এসেছে) হওয়ার কারণ হলো-

 

 এ শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যে কুফরী আচারানুষ্ঠানের প্রতি স্বীকৃতি ও অন্য ব্যক্তির পালনকৃত কুফরীর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। যদিও ব্যক্তি নিজে এ কুফরী করতে রাজী না হয়। কিন্তু, কোন মুসলিমের জন্য কুফরী আচারানুষ্ঠানের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করা কিংবা এ উপলক্ষে অন্যকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা হারাম। কেননা আল্লাহ তাআলা কুফরীর প্রতি সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন: “যদি তোমরা কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ্‌ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও; তবে (জেনে রাখ) তিনি তোমাদের জন্য সেটাই পছন্দ করেন।”[সূরা যুমার, আয়াত: ৭] 

 

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩] অতএব, কুফরী উৎসব উপলক্ষে বিধর্মীদেরকে শুভেচ্ছা জানানো হারাম; তারা সহকর্মী হোক কিংবা অন্য কিছু হোক।আর বিধর্মীরা যদি আমাদেরকে তাদের উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানায় আমরা এর উত্তর দিব না। কারণ সেটা আমাদের ঈদ-উৎসব নয়। আর যেহেতু এসব উৎসবের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট নন। আর যেহেতু আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত মানবজাতির কাছে ইসলাম ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন, যে ধর্মের মাধ্যমে পূর্বের সকল ধর্মকে রহিত করে দেয়া হয়েছে; হোক এসব উৎসব সংশ্লিষ্ট ধর্মে অনুমোদনহীন নব-সংযোজন কিংবা অনুমোদিত (সবই রহিত)। 

 

আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।”[সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ৮৫]

 

কোন মুসলমানের এমন উৎসবের দাওয়াত কবুল করা হারাম। কেননা এটি তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানোর চেয়ে জঘন্য। কারণ এতে করে দাওয়াতকৃত কুফরী অনুষ্ঠানে তাদের সাথে অংশ গ্রহণ করা হয়।অনুরূপভাবে এ উপলক্ষকে কেন্দ্র করে কাফেরদের মত অনুষ্ঠান করা, উপহার বিনিময় করা, মিষ্টান্ন বিতরণ করা, খাবার-দাবার আদান-প্রদান করা, ছুটি ভোগ করা ইত্যাদি মুসলমানদের জন্য হারাম। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের-ই দলভুক্ত”। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া তাঁর লিখিত ‘ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম’ গ্রন্থে বলেন: “তাদের কোন উৎসব উপলক্ষে তাদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করলে এ বাতিল কর্মের পক্ষে তারা মানসিক প্রশান্তি পায়। এর মাধ্যমে তারা নানাবিধ সুযোগ গ্রহণ করা ও দুর্বলদেরকে বেইজ্জত করার সম্ভাবনা তৈরী হয়।”[উদ্ধৃতি সমাপ্ত]যে ব্যক্তি বিধর্মীদের এমন কোন কিছুতে অংশগ্রহণ করবে সে গুনাহগার হবে। এ অংশগ্রহণের কারণ সৌজন্য, হৃদ্যতা বা লজ্জাবোধ ইত্যাদি যেটাই হোক না কেন। কেননা এটি আল্লাহর ধর্মের ক্ষেত্রে আপোষকামিতার শামিল। এবং এটি বিধর্মীদের মনোবল শক্ত করা ও স্ব-ধর্ম নিয়ে তাদের গর্ববোধ তৈরী করার কারণের অন্তর্ভুক্ত।আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন মুসলমানদেরকে ধর্মীয়ভাবে শক্তিশালী করেন, ধর্মের ওপর অবিচল রাখেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে তাদেরকে বিজয়ী করেন। নিশ্চয় তিনি শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী।[মাজমুউ ফাতাওয়া ওয়া রাসায়িলিস শাইখ ইবনে উছাইমীন ৩/৩৬৯]

প্রশ্ন: কিভাবে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে?

কোন মন্তব্য নেই:

উত্তর:

 

আলহামদুলিল্লাহ।

 আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে এ পৃথিবীর বাসিন্দা বানিয়েছেন। তিনি তাদেরকে কোন কিছু ছাড়া ছেড়ে দেননি। বরং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার-পানীয় ও পোশাক সৃষ্টি করেছেন। যুগে যুগে তাদের চলার জন্য জীবনাদর্শ নাযিল করেছেন। সর্বকালে ও সর্বস্থানে আল্লাহর নাযিলকৃত আদর্শ অনুসরণ করার মধ্যে ও অন্য সকল আদর্শ বর্জন করার মধ্যে মানবজাতির কল্যাণ ও সুখ নিহিত রয়েছে।
 আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর এ পথই আমার সরল পথ। কাজেই তোমরা এর অনুসরণ কর এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করবে না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হও।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১৫৩]

ইসলাম হচ্ছে সর্বশেষ আসমানী ধর্ম। কুরআন হচ্ছে- সর্বশেষ আসমানী কিতাব। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন- সর্বশেষ নবী ও রাসূল। আল্লাহ তাঁকে এ ধর্ম সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন: “এ কুরআন আমার নিকট ওহী করা হয়েছে যেন তোমাদেরকে এবং যার নিকট তা পৌঁছবে তাদেরকে এর দ্বারা সতর্ক করতে পারি।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১৯]
 আল্লাহ তাঁর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইসলাম দিয়ে সকল মানুষের কাছে প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন: “আপনি বলুন, হে মানুষ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সকলের প্রতি আল্লাহ্‌র রাসূল”[সূরা আরাফা, আয়াত: ১৫৮]

ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়া একটি উত্তম আমল। যেহেতু এই দাওয়াত দানের মাধ্যমে মানুষ সরল পথের দিশা পায়। এর মাধ্যমে মানুষকে তার দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তির পথ দেখানো হয়।“ঐ ব্যক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নেক আমল করে। আর বলে অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।”[সূরা ফুস্সিলাত, আয়াত: ৩৩]

ইসলামের দিকে আহ্বান করা একটি মর্যাদাপূর্ণ মিশন। এটি নবী-রাসূলদের কাজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর মিশন এবং তাঁর অনুসারীদের মিশন হচ্ছে- আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন: “বলুন, এটাই আমার পথ, আমি জেনে-বুঝে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকি, আমি এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারা। আর আল্লাহ্‌ কতই না পবিত্র এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।”[সূরা ইউসূফ, আয়াত: ১০৮]

আমভাবে সকল মুসলমান এবং খাসভাবে আলেমসমাজকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম।”[সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১০৪]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও”[সহিহ বুখারী (৩৪৬১)]

আল্লাহ্‌র দিকে দাওয়াত দান একটি মহান মিশন ও গুরু দায়িত্ব। কারণ দাওয়াত মানে- মানুষকে এক আল্লাহ্‌র ইবাদতের দিকে ডাকা, তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসা, অনিষ্টের জায়গায় কল্যাণ বপন করা, বাতিলের বদলে হক্ককে স্থান করে দেয়া। তাই যিনি দাওয়াত দিবেন তার ইলম, ফিকহ, ধৈর্য, সহনশীলতা, কোমলতা, দয়া, জান-মালের ত্যাগ, নানা পরিবেশ-পরিস্থিতি ও মানুষের আচার-অভ্যাস সম্পর্কে অবগতি ইত্যাদি গুণ থাকা প্রয়োজন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আপনি মানুষকে দাওয়াত দিন আপনার রবের পথে হিকমত ও উত্তম ওয়াযের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে তর্ক করুন উত্তম পদ্ধতিতে। নিশ্চয় আপনার রব, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়েছে, সে সম্বন্ধে তিনি বেশী জানেন এবং কারা সৎপথে আছে তাও তিনি ভালভাবেই জানেন।”[সূরা নাহল, আয়াত: ১২৫]

আল্লাহ তাআলা নিম্নোক্ত বাণীতে তাঁর রাসূলের উপর অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেন: “আল্লাহ্‌র দয়ায় আপনি তাদের প্রতি কোমল-হৃদয় হয়েছিলেন; যদি আপনি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। কাজেই আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন।”[সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১৫৯]

দাঈ বা দাওয়াত দানকারী দাওয়াত দিতে গিয়ে তর্কের সম্মুখীন হতে পারেন। বিশেষতঃ আহলে কিতাবদের (ইহুদী ও খ্রিস্টান) সাথে। যদি তর্কের পর্যায়ে পৌঁছে যায় সেক্ষেত্রে আল্লাহ আমাদেরকে উত্তম পন্থায় তর্ক করার নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তম তর্ক হচ্ছে- কোমলতা ও দয়ার মাধ্যমে, ইসলামের বুনিয়াদি দিকগুলো তুলে ধরার মাধ্যমে, ঠিক যেভাবে নির্মলভাবে কোনরূপ জোর-জবরদস্তি ব্যতিরেকে এ বুনিয়াদগুলো এসেছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন: “আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না, তবে তাদের সাথে করতে পার, যারা তাদের মধ্যে যুলুম করেছে। আর তোমরা বল, আমাদের প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে, তাতে আমরা ঈমান এনেছি। আর আমাদের ইলাহ্‌ ও তোমাদের ইলাহ্‌ তো একই। আর আমরা তাঁরই প্রতি মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী)।”[সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৬]

আল্লাহ্‌র দিকে দাওয়ার দেয়ার রয়েছে মহান মর্যাদা ও অফুরন্ত প্রতিদান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি কোন হেদায়েতের দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তির জন্য রয়েছে এমন প্রতিদান যে প্রতিদান এ হেদায়েতের অনুসরণকারীগণও পাবেন; কিন্তু অনুসারীদের প্রতিদান হতে বিন্দুমাত্রও কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি কোন ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তির জন্য রয়েছে এমন গুনাহ যে গুনাহ এ ভ্রষ্টতাতে লিপ্ত ব্যক্তিরা পাবে; কিন্তু অনুসারীদের গুনাহ থেকে বিন্দুমাত্রও কমানো হবে না”[সহিহ মুসলিম (২৬৭৪)]

বৈষয়িক কোন কিছুর ভিত তৈরী হয়ে পূর্ণতা পেতে যেমন পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন তেমনি মানুষের অন্তরগুলো গড়ে তুলতে এবং সেগুলোকে সত্যের পথে নিয়ে আসতে ধৈর্য ও ত্যাগের প্রয়োজন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের দিকে দাওয়াত দিয়েছেন এবং কাফের, ইহুদী ও মুনাফিকদের নির্যাতনের উপর ধৈর্য ধারণ করেছেন। তারা তাঁর সাথে উপহাস করেছে, মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, কষ্ট দিয়েছে, পাথর ছুড়ে মেরেছে। তারা বলেছে- তিনি যাদুকর, পাগল। তারা তাঁকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলেছে যে, তিনি কবি বা গণক। এসব কিছুর ওপর তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন। এক পর্যায়ে আল্লাহ তাঁকে সাহায্য করেছেন, তাঁর ধর্মকে বিজয়ী করেছেন। তাই দাঈর কর্তব্য হচ্ছে- তাঁর অনুসরণ করা। “অতএব আপনি ধৈর্য ধারণ করুন, নিশ্চয় আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি সত্য। আর যারা দৃঢ় বিশ্বাসী নয় তারা যেন আপনাকে বিচলিত করতে না পারে।”[সূরা রূম, আয়াত: ৬০]

তাই মুসলমানদের কর্তব্য হচ্ছে তাদের রাসূলের অনুসরণ করা। তাঁর আদর্শে পথ চলা। ইসলামের দাওয়াত দেয়া। আল্লাহর রাস্তায় কষ্টের মুখোমুখি হলে ধৈর্য ধারণ করা; যেভাবে তাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধৈর্য ধারণ করেছেন। “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে রাসূলুল্লাহ্‌র মধ্যে উত্তম আদর্শ, তার জন্য যে আশা রাখে আল্লাহ্‌ ও শেষ দিনের এবং আল্লাহ্‌কে বেশী স্মরণ করে।”[সূরা আহযাব, আয়াত: ২১]

এ দ্বীনের অনুসরণ করা ব্যতীত এ উম্মত সুখী হতে পারবে না, কল্যাণ অর্জন করতে পারবে না। এজন্য আল্লাহ্‌ তাআলা সকল মানুষের কাছে এ ধর্মকে প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: “এটা মানুষের জন্য এক বার্তা, আর যাতে এটা দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা জানতে পারে যে, তিনিই কেবল এক সত্য ইলাহ্‌ আর যাতে বুদ্ধিমানগণ উপদেশ গ্রহণ করে।”[সূরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৫২]

শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহীম আল-তুওয়াইজিরি লিখিত ‘উসুলুদ দ্বীন আল-ইসলামী’ গ্রন্থ হতে সংকলিত

প্রশ্ন: ইসলামে শূকর খাওয়া হারাম কেন? অথচ শূকর আল্লাহরই একটি সৃষ্টি। হারামই যদি হয় তাহলে আল্লাহ শূকরকে সৃষ্টি করলেন কেন?

কোন মন্তব্য নেই:

   উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ।

এক:আমাদের মহান প্রতিপালক শূকর খাওয়া অকাট্যভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “বলুন, আমার প্রতি যে ওহী হয়েছে তাতে লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না; মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত ও শূকরের গোশত ছাড়া। কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র।”[সূরা আনআম, আয়াত: ১৪৫]

আমাদের প্রতি আল্লাহর রহমত হচ্ছে এবং তাঁর পক্ষ থেকে সহজায়ন হচ্ছে — তিনি আমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ খাওয়া বৈধ করেছেন এবং শুধুমাত্র অপবিত্র বস্তুসমূহ হারাম করেছেন। তিনি বলেন: “তিনি তাদের জন্য পবিত্রবস্তু হালাল করেন এবং অপবিত্র বস্তু হারাম করেন”[সূরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭]

শূকর নাপাক ও নিকৃষ্ট প্রাণী— এ ব্যাপারে আমরা এক মুহূর্তের জন্যেও সন্দেহ পোষণ করি না। শূকর খাওয়া কোলেস্টেরল মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া শূকর ময়লা-আবর্জনা খেয়ে জীবন ধারণ করে; মানুষের সুস্থ রুচিবোধ যা অপছন্দ করে এবং এমন প্রাণী খেতে ঘৃণাবোধ করে। কারণ যে মেজাজ ও স্বভাবের ওপর আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এর সাথে এটি খাপ খায় না।দুই:আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মানব দেহের উপর শূকর খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা সাব্যস্ত করেছে; 

যেমন--   বিভিন্ন প্রাণীর গোশতের মধ্যে শূকরের গোশতে সবচেয়ে বেশি চর্বিযুক্ত কোলেস্টেরল রয়েছে। মানুষের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে রক্তনালী ব্লক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়া শূকরের গোশতে থাকা ‘ফ্যাটি এসিড’ অন্য সকল খাদ্যে থাকা ফ্যাটি এসিড থেকে ভিন্নরকম ও ভিন্ন গঠনের। তাই অন্য যে কোন খাদ্যের তুলনায় মানুষের শরীর খুব সহজে একে চুষে নেয়। যার ফলে, রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বেড়ে যায়।-   শূকরের গোশত ও চর্বি কোলন ক্যান্সার (বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার), রেক্টাল ক্যান্সার (মলদ্বারের ক্যান্সার), অণ্ডকোষের ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার ও ব্লাডক্যান্সার এর বিস্তার ঘটায়।-   

 

শূকরের গোশত ও চর্বি মেদ বাড়ায় এবং মেদ সংক্রান্ত রোগ বাড়ায়; যেগুলোর চিকিৎসা করা অনেক দুরূহ।-   শূকরের গোশত খাওয়া চর্মরোগ ও পাকস্থলির ছিদ্র ইত্যাদি রোগের কারণ।-

 

   শূকরের গোশত খাওয়ার ফলে সৃষ্ট ফিতা কৃমি ও ফুসফুসের কৃমির কারণে ফুসফুস আলসার ও ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়।শূকরের গোশত খাওয়ার সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হলো, শূকরের গোশতে ফিতা কৃমির শূককীট থাকে; যাকে বলা হয় টিনিয়া সলিয়াম (Taenia solium )। এ কৃমি ২-৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এ কৃমির ডিম্বগুলো যদি মস্তিষ্কে বৃদ্ধি পায় তাহলে পরবর্তীতে মানুষ পাগলামি ও হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আর যদি হার্টে বৃদ্ধি পায় তাহলে মানুষ উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টএটার্কে আক্রান্ত হতে পারে। 

 

শূকরের গোশতের মধ্যে আরও যেসব কৃমি থাকতে পারে সেগুলো হচ্ছে- ট্রিচিনিয়াসিস কৃমির শূককীট; রান্না করলেও এগুলো মরে না। মানুষের শরীরে এ কৃমি বাড়ার ফলে মানুষ প্যারালাইসিস ও চামড়ায় ফুসকুড়িতে আক্রান্ত হতে পারে।চিকিৎসকগণ জোরালোভাবে বলেন যে, ফিতাকৃমি অত্যন্ত মারাত্মক রোগ; শূকরের গোশত খাওয়ার ফলে যে রোগে আক্রান্ত হতে পারে। মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যেও এ কৃমিগুলো বাড়তে পারে এবং কয়েক মাসের মধ্যে পরিপূর্ণ কৃমিতে পরিণত হতে পারে।

 

 যে কৃমির দেহ এক হাজারটি অংশ দিয়ে গঠিত। এর দৈর্ঘ্য ৪-১০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে এটা এককভাবে বাস করতে পারে। এর ডিম্ব মানুষের মলের সাথে বেরিয়ে যায়। শূকর যখন এসব ডিম গিলে ফেলে ও হজম করে তখন এটা শুককীটের থলি আকারে টিস্যু ও পেশীতে প্রবেশ করে। এ থলিতে এক জাতীয় তরল ও ফিতাকৃমির মাথা থাকে। যখনি কোন লোক এ ধরণের কোন শূকরের গোশত খায় তখনি এ শূককীট মানুষের পাকস্থলীতে পরিপূর্ণ কৃমিতে পরিণত হয়। এ কৃমিগুলো মানুষকে দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি ঘটায়। যার ফলে মানুষের রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। এ ছাড়াও অন্য কিছু স্নায়ুবিক সমস্যা ঘটায়, যেমন-স্নায়ু প্রদাহ। কোন কোন ক্ষেত্রে এ শূককীট মস্তিষ্কে পৌঁছে খিঁচুনি বা ব্রেইনের উচ্চ রক্তচাপ ঘটতে পারে। 

 

যার কারণে মাথা ব্যথা, খিঁচুনি, এমনকি প্যারালাইসিসও হতে পারে।ভালভাবে সিদ্ধ না করা-শূকরের গোশত খেয়ে মানুষ ট্রিচিনিয়াসিস কৃমিতে আক্রান্ত হতে পারে। এ প্যারাসাইটগুলো যখন মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রে পৌঁছে তখন ৪-৫ দিনের মধ্যে এগুলো অসংখ্য কৃমি হয়ে পরিপাকতন্ত্রের দেয়ালে প্রবেশ করে। সেখান থেকে রক্তে এবং রক্তের মাধ্যমে শরীরের অধিকাংশ পেশীতে ঢুকে পড়ে। কৃমিগুলো শরীরের পেশীতে ঢুকে সেখানে থলি তৈরী করে। যার ফলে রোগী পেশীতে তীব্র ব্যথা অনুভব করে। এ রোগ বেড়ে গিয়ে এক পর্যায়ে মস্তিষ্কের আবরণী ও মস্তিষ্কের প্রদাহ রোগে পরিণত হয়, হার্ট, ফুসফুস, কিডনি ও স্নায়ুর প্রদাহে পরিণত হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ রোগ মৃত্যুও ঘটাতে পারে।এ ছাড়া মানুষের এমন কিছু রোগ আছে যে রোগগুলো প্রাণীদের মধ্যে শুধুমাত্র শূকরের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়; যেমন- Rheumatology (বাতরোগ) ও জয়েন্টের ব্যথা।

 

 আল্লাহ তাআলা ঠিকই বলেছেন: “তিনি আল্লাহ্‌ তো কেবল তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্‌ত এবং যার উপর আল্লাহ্‌র নাম ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে। তবে, যে ব্যক্তির আর কোন উপায় ছিল না, (সে সেটা ভক্ষণ করেছে তবে) নাফরমান ও সীমালংঘনকারী হয়ে নয়; তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[সূরা, বাকারা, আয়াত: ১৭৩]

 

এই হচ্ছে- শূকরের গোশ্‌ত খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিক। এ ক্ষতিগুলো জানার পর আশা করি আপনি শূকর খাওয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করবেন না। আমরা আশা করছি, সত্য ধর্মের দিকে ফিরে আসার ক্ষেত্রে এটা আপনার প্রথম পদক্ষেপ হবে। সুতরাং আপনি একটু থামুন, একটু অনুসন্ধান করুন, একটু চিন্তা করুন; পরিপূর্ণ ইনসাফ ও ন্যায়সঙ্গতভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে; সত্যকে জানা ও মানার উদ্দেশ্য নিয়ে। আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন তিনি যেন দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ যাতে রয়েছে সেটার সন্ধান আপনাকে দান করেন।

 

আমরা যদি শূকরের গোশ্‌ত খাওয়ার কোন একটি অপকারিতাও জানতে না পারতাম তাহলেও শূকর হারাম হওয়ার ব্যাপারে আমাদের ঈমানের কোন পরিবর্তন হত না এবং সেটা বর্জনের ক্ষেত্রেও কোন দুর্বলতা আসত না। জেনে রাখুন, শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নিষিদ্ধ একটি গাছ থেকে খাদ্য খাওয়ার কারণে আদম আলাইহিস সালামকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু, আমরা সে গাছ সম্পর্কে কিছুই জানি না। কেন নিষিদ্ধ করা হল— আদম আলাইহিস সালাম এর সে কারণ অনুসন্ধান করার কোন প্রয়োজন ছিল না। 

 

বরং এতটুকু জানাই তার জন্য যথেষ্ট ছিল যে, আল্লাহ্‌ এটাকে নিষিদ্ধ করেছেন। একইভাবে আমাদের জন্য এবং প্রত্যেক মুমিনের জন্য এতটুকু জানাই যথেষ্ট।শূকরের গোশ্‌ত খাওয়ার আরও কিছু অপকারিতা দেখুন “আবহাসুল মু’তামারিল আলাম আল-ইসলামি আনিত্তিবিল ইসলামি” (আন্তর্জাতিক ইসলামি চিকিৎসা সম্মেলন এর গবেষণাসমগ্র), কুয়েত থেকে প্রকাশিত, পৃষ্ঠা ৭৩১ ও তৎ পরবর্তী এবং আরও দেখুন, লু’লুআ বিনতে সালেহ লিখিত “আল-ওকাইয়া আস-সিহহিয়্যা ফি দাওঈল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ” (কুরআন-হাদিসের আলোকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা), পৃষ্ঠা- ৬৩৫ ও তৎ পরবর্তী।

 

প্রিয় প্রশ্নকারী, আমরা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই: ‘ওল্ড টেস্টমেন্টে কি শূকর খাওয়া নিষিদ্ধ নয়?’ যে কিতাবটি আপনাদের পবিত্র গ্রন্থেরই একটি অংশ। সেখানে আছে “প্রভু যেগুলো ঘৃণা করেন সেগুলো তোমরা খেও না। তোমরা এই সমস্ত পশুদের খেতে পার.......। তোমরা অবশ্যই শুয়োর খাবে না। শুয়োরের পায়ের খুরগুলো বিভক্ত; কিন্তু তারা জাবর কাটে না। সুতরাং খাদ্য হিসেবে শুয়োরও তোমাদের জন্য অপবিত্র। শুয়োরের কোনো মাংস খাবে না। এমনকি শুয়োরের মৃত শরীর স্পর্শ করবে না।”[দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায়-১৪, স্তবক: ৩-৮] 

 

অনুরূপ বক্তব্য রয়েছে লেবীয় পুস্তকে, অধ্যায়-১১, স্তবক: ১-৮।

 

শূকর যে ইহুদীদের জন্য নিষিদ্ধ আমরা এর প্রমাণ উল্লেখ করার কোন প্রয়োজনীয়তা দেখছি না। যদি আপনার কোন সন্দেহ থাকে তাহলে ইহুদীদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, তারাই আপনাকে জানাবে। তবে, আমরা মনে করছি ‘আপনাদের পবিত্র গ্রন্থে এ ব্যাপারে যা এসেছে সে সম্পর্কে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন। আপনাদের সে কিতাবের ‘নিউ টেস্টমেন্টে’ কি বলা হয়নি যে, ‘তৌরাতের বিধান আপনাদের জন্যেও সাব্যস্ত; পরিবর্তনীয় নয়।

 

 সেখানে কি মসীহ বলেননি যে, “এই কথা মনে কোরো না, আমি তৌরাত কিতাব আর নবীদের কিতাব বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসিনি; বরং পূর্ণ করতে এসেছি। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আসমান ও জমীন শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যতদিন না তৌরাত কিতাবের সমস্ত কথা সফল হয় ততদিন সেই তৌরাতের এক বিন্দু কি এক মাত্রা মুছে যাবে না।”[মথি, অধ্যায়-৫, স্তবক ১৭-১৮]

 

এই উক্তি থাকার পর শূকরের বিধান সম্পর্কে ‘নিউ টেস্টমেন্টে’ আর কোন প্রমাণ খোঁজার দরকার হয় না। তারপরেও আমরা শূকর নাপাক হওয়া সম্পর্কে আপনাকে আরও অকাট্য একটি দলিল দিচ্ছি। “সেখানে পর্বতের পাশে একদল শুয়োর চরছিল, আর তারা (অশুচি আত্মারা) যীশুকে অনুনয় করে বলল, ‘আমাদের এই শুয়োরের পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন।’ তিনি তাদের অনুমতি দিলে সেই অশুচি আত্মারা বের হয়ে শুয়োরদের মধ্যে ঢুকে পড়ল।”[মার্ক, অধ্যায়-০৫; স্তবক ১১-১৩]

 

শূকর এর নাপাকি ও শূকর পালনকারীর নিকৃষ্টতা সম্পর্কে জানতে আরও দেখুন মথি ৬৭; পিটারের দ্বিতীয় পত্র-২২; লুক ১৫/১১-১৫]

 

আপনি হয়তো বলবেন যে, এ বিধান রহিত হয়ে গেছে যেমনটি বলেছেন পিটার ও পল?!!আল্লাহর বাণীকে এভাবে পরিবর্তন করা হবে?! তৌরাতকে রহিত করা হবে?! মসীহ এর বাণীকে রহিত করা হবে?! যে বাণীতে তিনি আপনাদেরকে তাগিদ দিয়ে গেছেন যে, এটি আসমান ও জমিন সাব্যস্তের ন্যায় সাব্যস্ত। পল বা পিটারের বাণীর মাধ্যমে এ সবগুলো বাণীকে রহিত করা হবে?!যদি আমরা ধরে নিই যে, পল বা পিটারের কথাই ঠিক; আসলেই শূকর নিষিদ্ধ হওয়ার বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। কিন্তু, ইসলামে শূকর নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আপনারা অস্বীকার করছেন কেন; যেভাবে আপনাদের ধর্মেও প্রথমে নিষিদ্ধ ছিল?

 

!তিন:আপনি বলেছেন, “হারামই যদি হয় তাহলে আল্লাহ শূকরকে সৃষ্টি করলেন কেন?” আমরা মনে করি না— এটি আপনার আন্তরিক প্রশ্ন। যদি আন্তরিক প্রশ্ন হয়, তাহলে আমরাও আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি, আল্লাহ অমুক অমুক কষ্টদায়ক বা অপবিত্র জিনিশ সৃষ্টি করলেন কেন?! বরং আমরা আপনাকে এ প্রশ্নও করতে পারি, আল্লাহ্‌ শয়তানকে সৃষ্টি করলেন কেন?!সৃষ্টিকর্তার কি এ অধিকার নাই যে, তিনি তাঁর বান্দাদেরকে যা খুশি তাই নির্দেশ করবেন, যা ইচ্ছা তাই হুকুম করবেন। তাঁর হুকুমের সমালোচনা করার অধিকার কার আছে, তাঁর আদেশ পরিবর্তন করার অধিকার কার আছে?অনুগত মাখলুকের কর্তব্য কি এটা নয় যে, মালিক যখনি যে আদেশ করবেন তখনি সে বলবে: শুনলাম এবং মানলাম?(হতে পারে শূকর খেতে আপনার কাছে মজা লাগে, আপনি শূকর পছন্দ করেন, আপনার চারপাশের লোকজন শূকরকে খুব উপভোগ করে। কিন্তু জান্নাতের জন্য আপনার পছন্দের কিছু বিষয়কে উৎসর্গ করা কি কর্তব্য নয়?) 

What is Description of the Prophet’s prayer ?.

কোন মন্তব্য নেই:

Praise be to Allah

1 – Facing the direction of the Ka’bah

 1-                 When you stand up to pray, face the direction of the Ka’bah wherever you are, in both fard (obligatory) and naafil (supererogatory) prayers. This is one of the pillars of prayer, without which prayer is not valid.

 

2-                 The obligation of facing the direction of prayer does not apply to one who is engaged in warfare, when he prays the fear prayer (salaat al-khawf) or is engaged in heavy fighting. It also does not apply to those who are unable to do it, such as one who is sick, or one who is traveling on a ship, in a car or on a plane, if they fear that the time of the prayer will elapse (before they reach a place where they can find the correct direction). And it does not apply to one who is praying a naafil prayer or witr prayer whilst riding on a riding-animal etc., but it is mustahabb for him to face the qiblah if he is able to do so when pronouncing the takbeer of ihraam (at the beginning of the prayer), then he may face whatever direction he is facing.

 

3-                 Everyone who can see the Ka’bah must face it; those who cannot see it must face its direction. Ruling on not facing the Ka’bah in prayer by mistake:

 

 4-                 If a person prays not facing the qiblah, because of clouds [preventing him from working out the direction from the position of the sun] or some other reason, after he did his best to work out the right direction, his prayer is valid and he does not have to repeat it.

 

5-                 If someone whom he trusts comes – whilst he is praying – and tells him of the right direction, then he must hasten to turn that way, and his prayer is valid. 2 – Qiyaam (standing in prayer) 

 

6-                 It is obligatory to pray standing. This is a pillar (essential part of prayer), except for the one who is praying the fear prayer or at times of intense fighting, when it is permitted to pray whilst riding; for the one who is sick and unable to stand, who should pray sitting if he is able, otherwise lying on his side; and the one who is praying a naafil prayer, who may pray whilst riding or sitting if he wishes, and he indicates the rukoo’ and sujood with his head. The one who is sick may also do this, and he should make his sujood lower than his rukoo’

 

.7-                 It is not permissible for one who is praying sitting down to put something raised up on the ground in order to prostrate on it. Rather he should make his sujood lower than his rukoo’ – as we have mentioned – if he is unable to touch the ground directly with his forehead. Prayer on board a ship or airplane 

 

8-                 It is permissible to pray fard prayers on board a ship or airplane.

 

9-                 It is permissible to pray them sitting down if one fears that one may fall.

 

10-            It is permissible to lean on a pillar or stick when standing, if one is old or weak in body. Combining standing and sitting in prayer 

 

11-            It is permissible to pray qiyaam al-layl standing or sitting with no excuse, or to do both. So a person may pray and reciting sitting down, and just before doing rukoo’ he may stand up and recite the rest of the aayahs standing up, then do rukoo’ and sujood, then he can do likewise in the second rak’ah.

 

12-            If he prays sitting down, he should pray sitting cross-legged or in whatever position he finds comfortable.  Praying wearing shoes  

 

13-            It is permissible to pray barefoot, or to pray wearing shoes.

 

14-            It is better to pray sometimes barefoot and sometimes wearing shoes, according to what is easy; one should not make it difficult to put shoes on or to take them off in order to pray If a person is barefoot, he should pray barefoot and if he is wearing shoes then he should pray wearing shoes, except when there is a reason not to do so.

 

15-            If he takes them off, then he should not place them to his right; rather he should place them to his left, if there is no one on his left, otherwise he should put them between his feet. There is a subtle hint that he should not place them in front of himself. This is the etiquette which most worshippers ignore, so you see them praying facing their shoes! This is what was narrated in the saheeh reports from the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him). Praying on the minbar

 

 16-            It is permissible for the imaam to pray on an elevated place such as the minbar, in order to teach the people. So he should stand up on it to pray, then say takbeer, recite Qur’aan and do rukoo’ whilst he is on that place, then he should come down backwards so that he can prostrate on the ground at the base of the minbar, then he may go back to it and do the same in the second rak’ah as he did in the first. It is obligatory to pray facing a sutrah and be close to it 

 

17-            It is obligatory to pray facing a sutrah (screen or cover), there is no difference whether that is in the mosque or elsewhere, whether the mosque is big or small, because of the general meaning of the hadeeth of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), “Do not pray except facing a sutrah, and do not let anyone pass in front of you, and if he insists then fight him, for he has a companion (qareen) with him” – meaning the Shaytaan.

 

18-            It is obligatory to be close to the sutrah, because this is what the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) commanded.

 

19-            Between the place where the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) prostrated and the wall there would be a space nearly big enough for a sheep to pass through. Whoever does that is close enough [to the sutrah] as is required. I say: from this we known that what people do in all the mosques that I have seen in Syria and elsewhere, by praying in the middle of the mosque far away from the wall or pillars is but negligence towards the command and action of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him). How high should the sutrah be? 

 

20-            The sutrah should be approximately a handspan or two above the ground, because the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “When one of you places in front of him something such as the stick on the end of a saddle, he should pray and not worry about anyone who passes in front of that.” This hadeeth indicates that a line on the ground is not sufficient, and the hadeeth narrated concerning that is da’eef (weak).

 

21-            He should face the sutrah directly, because this is apparent meaning of the command to pray towards the sutrah. Stepping slightly to the right or left so that one is not facing it directly, is not correct.

 

22-            It is permissible to pray facing a stick planted in the ground and the like, or a tree, or a pillar, or one’s wife lying down in bed underneath her blanket, or an animal, even if it is a camel. Prohibition of praying towards graves

 

 23-            It is not permitted to pray facing graves at all, whether they are the grave of Prophets or of others. Prohibition of walking in front of one who is praying even in al-Masjid al-Haraam 

 

24-            It is not permitted to walk in front of one who is praying if there is a sutrah in front of him [i.e., it is not permissible to come between him and his sutrah]. There is no difference in this regard between al-Masjid al-Haraam and other mosques, all of them are the same in that this [walking in front of one who is praying] is not permitted, because of the general meaning of the words of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him): “If the person who passes in front of one who is praying knew how great a burden of sin resulted from that, standing for forty [years] would be better for him than passing in front of one who is praying.” This refers to passing between him and the place of his prostration. The hadeeth which speaks of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) praying in Haashiyat al-Mataaf without a sutrah and with people passing in front of him is not saheeh, even though it does not say that they were passing between him and his place of prostration. It is obligatory for the one who is prostrating to prevent the one who wants to pass in front of him, even in Masjid al-Haraam.

 

25-            It is not permissible for the one who is praying towards a sutrah to let anyone pass in front of him, because of the hadeeth quoted above, “Do not let anyone pass in front of you…” And because the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “When one of you is praying towards something which is a sutrah between him and the people, and someone wants to pass in front of him, then he should push him in the upper chest and repel him as much as he can.” According to another report: “… he should stop him twice, but if he insists then he should fight him, for he is a devil.” Stepping forward to prevent someone passing in front of him 

 

26-            It is permissible for a person to take one or two steps to the front, in order to prevent one who is not responsible from passing in front of him, such as an animal or a small child, and to make them pass behind him. What breaks prayer 

 

27-            The sutrah is so important to prayer that it prevents a person’s prayer from being invalidated, if someone passes in front of him. This is in contrast to the one who does not use a sutrah, whose prayer is broken if an adult woman, a donkey or a black dog passes in front of him.  3 – Niyyah (intention)

 

 28-            The worshipper must have the intention of praying the prayer for which he is standing. He must have the intention in his heart of performing a specific prayer, such as the fard (obligatory prayer) of Zuhr or of ‘Asr, or the Sunnah of those prayers. This is a condition or pillar (essential part) of the prayer, but uttering the intention verbally is a bid’ah which goes against the Sunnah, which was not suggested by any of the imams who are followed. 4 – Takbeer

 

 29-            Then he should start the prayer by saying “Allaahu akbar (Allaah is Most Great).” This is an essential part of the prayer, because the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “The key to prayer is purifying oneself (wudoo’), it is entered by takbeer (saying ‘Allaahu akbar’) and exited by tasleem (saying ‘al-salaamu ‘alaykum’)” i.e, once you say takbeer, certain things are prohibited and this prohibition ends when you say tasleem.

 

30-            He should not raise his voice when saying takbeer in all the prayers, unless he is acting as an imaam.

 

31-            It is permissible for the muezzin to convey the takbeer of the imaam to the people, if there is a need to do so, such as if the imaam is sick and his voice is weak, or because there are many worshippers praying behind him.

 

32-            The one who is following the imaam should not say takbeer until the imaam has finished saying takbeer. Raising the hands – how it is to be done 

 

33-            He should raise his hands when saying the takbeer, or before or after doing so. All of these are proven in the Sunnah.

 

34-            He should raise them with the fingers stretched out.

 

35-            He should raise them level with his shoulders, or sometimes until they are level with his earlobes. I say: with regard to touching the earlobes with the thumbs, there is no basis for this in the Sunnah, rather in my view this has to do with waswaas (insinuating whispers of the Shaytaan).                                            Placing the hands – how it is to be done 

 

36-            Then he should place his right hand on his left, immediately after the takbeer. This is the way of the Prophets (peace be upon them), and this is what the Messenger of Allaah  (peace and blessings of Allaah be upon him) enjoined upon his companions. It is not permissible to let the arms hang at the sides.

 

37-            The right hand should be placed on the back of the left hand, wrist and forearm.

 

38-            Sometimes the left hand may be grasped with the right. The combination of placing and grasping, which was favoured by some later scholars, has no basis.  Where they should be placed 

 

39-            The hands should be placed on the chest only; there is no difference between men and women in this regard. I say: placing them anywhere other than on the chest is da’eef (weak) or has no basis.

 

40-            It is not permissible to put the right hand on the waist. Humility and looking at the place of prostration

 

 41-            The worshipper must be humble in his prayer, and should avoid everything that may distract him from it, such as adornments and decorations. He should not pray where there is food that he wants to eat, or when he needs to urinate or defecate.

 

42-            Whilst he is standing, he should look towards the place where he will prostrate.

 

43-            He should not look to the right or the left, because looking here and there is a snatching away which the Shaytaan steals from the prayer of the slave.

 

44-            It is not permissible for him to look up at the sky. Du’aa’ al-Istiftaah (du’aa’ at the start of prayer)

 

 45-            Then he should start the prayer with some of the du’aa’s which are narrated from the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him). There are many of these, the most famous of which is “Subhaanaka Allaahumma wa bihamdika, wa tabaaraka ismuka wa ta’aala jadduka, wa laa ilaaha ghayruka (Glory and praise be to You O Allaah, blessed be Your name and exalted be Your Majesty, and there is no god but You).” The command to do this is proven so we should adhere to it. Whoever wants to see the other du’aa’s may refer to Sifat al-Salaah, p. 91-95, Maktabat al-Ma’aarif, Riyadh, edition. [In English, see “The Prophet’s Prayer described” by Shaykh al-Albaani, al-Haneef Publications, p. 14-19] Recitation of Qur’aan 

 

46-            Then he should seek refuge with Allaah – this is obligatory, and he is sinning if he omits to do so.47-            The Sunnah is sometimes to say “A’oodhu Billaahi min al-Shaytaan il-rajeem, min hamzihi wa nafkhihi wa nafathihi (I seek refuge with Allaah from the accursed Satan, from his madness, his arrogance and his poetry),” – poetry here refers to blameworthy kinds of poetry.

 

48-            And sometimes he may say, “A’oodhu Billaah il-Samee’ il-A’leem min al-Shaytaan… (I seek refuge with Allaah, the All-Hearing, All-Knowing, from the Shaytaan…).”

 

49-            Then he should say silently – whether the prayer is to be recited aloud or silently – “Bismillah ar-Rahmaan ar-Raheem (In the Name of Allaah, Most Gracious, Most Merciful).” Reciting al-Faatihah 

 

50-            Then he should recite Soorat al-Faatihah (the first soorah of the Qur’aan) in full, including the Basmalah (Bismillaahi ar-Rahmaan ar-Raheem). This is an essential part of the prayer, without which the prayer is not valid. Those who do not speak Arabic must memorize this soorah.

 

51-            Those who cannot remember it should say: “Subhaan Allaah, wa’l-hamdu-Lillaah, wa laa ilaaha ill-Allaah, wa Allaahu akbar, wa laa hawla wa laa quwwata illa Billaah (Glory be to Allaah, praise be to Allaah, there is no god but Allaah, Allaah is Most Great, and there is no strength and no power except with Allaah).”

 

52-            The Sunnah is to recite it one verse at a time, and to pause at the beginning of each aayah. So he should say: “Bismillaah ar-Rahmaan ar-Raheem (In the Name of Allaah, the Most Gracious, the Most Merciful),” then pause. Then say, “Al-Hamdu Lillaahi Rabb il-‘Aalameen (All the praises and thanks be to Allâh, the Lord of the ‘Aalameen (mankind, jinn and all that exists), then pause. Then say: ‘al-Rahmaan ar-Raheem (The Most Gracious, the Most Merciful), then pause… and so on, until the end of the aayah.This is how the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) used to recite the whole soorah, pausing at the end of each aayah and not joining one aayah to the next, even if there is continuity of the meaning.

 

53-            It is permissible to read it as Maaliki Yawn id-Deen or Maliki Yawm id-Deen. How the one who is praying behind the imaam should recite it 

 

54-            The one who is praying behind the imam should recite it behind the imaam in prayers where Qur’aan in recited silently and in prayers where it is recited aloud, if he cannot hear the imam’s recitation, or if he pauses after completing it so that those who are praying behind him can recite it. We think that this pause was not proven in the Sunnah. I say I have mentioned the evidence of those who think that this pause is permissible and the refutation of that evidence, in Silsilat al-Ahaadeeth al-Da’eefah, no. 546, 547, part 2, p. 24-26, Dar al-Ma’aarif edition. Recitation after al-Faatihah

 

 55-            It is Sunnah to recite – after al-Faatihah – another soorah, even in Salaat al-Janaazah (funeral prayer), or some aayahs, in the first two rak’ahs.

 

56-            The recitation may be made lengthy sometimes, and shorter sometimes, for reasons of travel, coughing, sickness or the crying of an infant.

 

57-            The recitation varies according to the prayers. The recitation in Fajr prayer is longer than it is in all the other prayers. Next longest is Zuhr, then ‘Asr, then ‘Isha’, then Maghrib, usually.

 

58-            The recitation in the night prayers (qiyaam al-layl) is longer than all of these.

 

59-            The Sunnah is to make the recitation longer in the first rak’ah than in the second.

 

60-            He should make the recitation in the last two shorter than in the first two rak’ahs, half the length. If you want more details on this topic, see Sifat al-Salaah p. 102 (Arabic original). Reciting al-Faatihah in every rak’ah 

 

61-            It is obligatory to recite al-Faatihah in every rak’ah.62-            It is Sunnah to add to it in the last two rak’ahs as well.

 

63-            It is not permissible for the imaam to make his recitation longer than that which is described in the Sunnah, because that is difficult for those who may be praying behind him, such as the elderly and sick, or nursing mothers, or those who have other things to do. Reciting aloud and reciting quietly

 

 64-            Qur’aan should be recited aloud in Fajr and Jumu’ah prayers, Eid prayers, prayers for rain (istisqaa’), prayers at the time of an eclipse (kusoof) and in the first two rak’ahs of Maghrib and ‘Isha’.He should recite silently in the first two rak’ahs of Zuhr and ‘Asr, in the third rak’ah of Maghrib and in the last two rak’ahs of ‘Ishaa’.

 

65-            It is permissible for the imaam occasionally to make an aayah audible in the prayers where recitation is to be done silently.

 

66-            In Witr and Qiyaam al-Layl, he should recite silently sometimes and aloud sometimes, and he should be moderate in raising his voice. Tarteel – reciting at a measured pace

 

 67-           The Sunnah is to recite the Qur’aan at a measured pace, not quickly or hastily. It should be read in a manner that clearly distinguishes each letter, beautifying the Qur’aan with one’s voice. He should observe the well known rulings of the scholars of Tajweed and he should not recite it in the innovated manner of singers or according to the rules of music. Prompting the imaam

 

 68-            It is prescribed for the one who is praying behind the imaam to prompt the imaam if he hesistates in his recitation.  6 – Rukoo’ (bowing) 

 

69-            When he has completed the recitation, he should pause briefly, to catch his breath.

 

70-            Then he should raise his hands in the manner described for takbeerat al-ihraam (the takbeer at the beginning of prayer).

 

71-            And he should say takbeer (“Allahu akbar”). This is obligatory.

 

72-            Then he should do rukoo’, bowing as deeply as his joints will let him, until his joints take the new position and are relaxed in it. This is an essential part of prayer. How to do rukoo’

 

 73-            He should put his hands on his knees, firmly, spacing the fingers out, as if he is grasping his knees.

 

74-            He should spread his back and make it level so that if water were poured on it, it would stay there (not run off).

 

75-            He should not lower or raise his head, but make it level with his back.

 

76-            He should keep his elbows away from his sides.

 

77-            In rukoo’, he should say “Subhaana Rabbiy al-‘Azeem (Glory be to my Lord, the Almighty) three times or more. There are others kinds of dhikr which may be said in rukoo’, some of which are long, some of medium length and some short. See Sifat Salaat al-Nabi (peace and blessings of Allaah be upon him), p. 132, Maktabat al-Ma’aarif edition [The Prophet’s Prayer Described, p. 44]. Making the essential parts of prayer equal in length  

 

78-            It is Sunnah to make the essential parts of prayer equal in length, so the rukoo’, the standing after rukoo’, the prostration and the sitting between the two prostrations should be make approximately the same in length.

 

79-            It is not permissible to recite Qur’aan in rukoo’ or in sujood. Straightening up from rukoo’

 

 80-            Then he should straighten up from rukoo’. This is an essential part of the prayer.

 

81-            Whilst straightening up, he should say, “Sami’a Allaahu liman hamidah (Allaah listens to the one who praises Him).” This is obligatory.

 

82-            He should raise his hands when straightening up, in the manner described above.

 

83-            Then he should stand straight until every vertebra has returned to its place. This is an essential part of the prayer.

 

84-            Whilst standing thus, he should say, “Rabbanaa wa laka al-hamd (our Lord, to You be all praise).” (There are other kinds of dhikr which may be said at this point. See Sifat al-Salaah, p. 135/The Prophet’s prayer described, p. 47). This is obligatory for every person who is praying, even if he is following an imaam, because this is the dhikr of standing after rukoo’, and saying “Sami’a Allaahu liman hamidah” is the dhikr of straightening up from rukoo’. It is not prescribed to put the hands one over the other during this standing, because this was not narrated (from the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him)). For more details, see Sifat Salaat al-Nabi, 1 – Istiqbaal al-Qiblah (The Prophet’s Prayer Described – Facing the Ka’bah).

 

85-            He should make this standing equal in length to the rukoo’, as stated above. 7 – Sujood (prostration) 

 

86-            Then he should say “Allaahu akbar” – this is obligatory.

 

87-            He should raise his hands sometimes. Going down on the hands

 

 88-            Then he should go down into sujood on his hands, putting them down before the knees. This is what was commanded by the Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him), and it is proven that he did this, and he forbade imitating the manner in which a camel sits down, which is by kneeling with its forelegs first. [this appears to contradict the point he is trying to make]

 

89-            When he prostrates – which is an essential part of the prayer – he should put his weight on his palms and spread them out.

 

90-            He should keep the fingers together.

 

91-            And point the fingers towards the qiblah.

 

92-            He should put his palms level with his shoulders.

 

93-            Sometimes he should make them level with his ears.

 

94-            He should keep his forearms off the ground. This is obligatory. He should not spread them along the ground like a dog.

 

95-            He should place his nose and forehead firmly on the ground. This is an essential part of the prayer.

 

96-            He should also place his knees firmly on the ground.

 

97-            The same applies to his toes.

 

98-            He should hold his feet upright with his toes touching the ground. All of this is obligatory.

 

99-            He should make his toes point in the direction of the qiblah.

 

100-        He should put his heels together. Being at ease in sujood 

 

101-        He should be at ease in sujood, distributing his weight equally [?] on the parts of the body which should be in contact with the ground during sujood. They are: the nose and forehead, the palms, the knees, and the toes.

 

102-        Whoever is at ease in his sujood in this manner has got it right. And this being at ease is also an essential part of the prayer.

 

103-        In sujood, he should say, “Subhaana Rabbiy al-‘A’laa (Glory be to my Lord Most High)” three times or more. (There are other kinds of dhikr also, see Sifat Salaat al-Nabi (peace and blessings of Allaah be upon him), p. 145/The Prophet’s Prayer described, p. 55).

 

104-        It is mustahaab to offer a lot of du’aa’ during sujood, because it is a time when du’aa’ is likely to be answered.

 

105-        He should make his sujood almost as long as his rukoo’, as described above.

 

106-        It is permissible to prostrate on the bare ground, or on something covering the ground such as a garment or carpet, or a mat, etc.

 

107-        It is not permitted to recite Qur’aan whilst prostrating. Iftiraash and Iq’aa’ between the two sajdahs [Iftiraash means sitting on the left thigh with the right foot upwards and its toes pointed towards the qiblah; iq’aa’ means resting on both heels and feet] 

 

108-        Then he should raise his head, saying takbeer. This is obligatory.

 

109-        He should raise his hands sometimes.

 

110-        Then he should sit at ease, until every vertebra returns to its place. This is obligatory.

 

111-        He should spread his left leg and sit on it. This is obligatory.

 

112-        He should put his right foot upright.113-        And make its toes point towards the qiblah.

 

114-        It is permissible to sit in iq’aa’ sometimes, which means resting on the heels and feet.

 

115-        Whilst sitting thus, he should say, “Allaahumma ighfir li warhamni wajburni, warfa’ni, wa’aafini warzuqni (O Allaah, forgive me, have mercy on me, strengthen me, raise me in status, pardon me and grant me provision).”

 

116-        If he wishes, he may say, “Rabbi ighfir li, Rabbi ighfir li (My Lord, forgive me, my Lord, forgive me).”

 

117-        He should make this sitting almost as long as his sujood.  The second sajdah 

 

118-        Then he should say takbeer – this is obligatory,119-        He should raise his hands sometimes when saying this takbeer.

120-        He should do the second prostration – this is also an essential part of the prayer.

 

121-        He should do in the second prostration what he did in the first. The sitting of rest 

 

122-        When he raises his head from the second prostration and he wants to get up for the second rak’ah, he should say takbeer. This is obligatory.

 

123-        He should raise his hands sometimes.

 

124-        He should sit up straight, sitting on his left foot, until every bone returns to its place. The second rak’ah

 

 125-        Then he should get up for the second rak’ah, supporting himself on his hands with his fists clenched as if kneading dough. This is an essential part of the prayer.

 

126-        He should do in the second rak’ah what he did in the first.

127-        Except that he should not recite the du’aa’ for starting the prayer.

 

128-        He should make it shorter than the first rak’ah. Sitting for the Tashahhud 

 

129-        When he completes the second rak’ah, he should sit for the Tashahhud. This is obligatory.

 

130-        He should sit in iftiraash, as described above for the sitting between the two prostrations.

 

131-        But it is not permitted to sit in iq’aa’ at this point.

 

132-        He should put his right hand on his right thigh and knee, and the end of the right elbow on the thigh, not far from it.

133-        He should spread his left palm on his left thigh and knee.

 

134-        It is not permissible to sit resting on one’s arms, especially the left arm. Moving the finger and looking at it 

 

135-        He should clench all the fingers of his right hand, and put the thumb on the middle finger sometimes.

 

136-        Sometimes he should make a circle with them.

 

137-        He should point with his index finger towards the qiblah.

 

138-        He should look towards it.

 

139-        He should move it, making du’aa’ with it, from the beginning of the Tashahhud until the end.

 

140-        He should not point with the finger of his left hand.

 

141-        He should do all of this in every Tashahhud. How to say Tashahhud and the du’aa’ following it 

 

142-        The Tashahhud is obligatory, and if he forgets it, he must do the two prostrations of forgetfulness (sajdat al-sahw).

 

143-        He should recite it silently.

 

144-        The wording of the Tashahhud is: “Al-tahiyyaatu Lillaahi wa’l-salaawaatu wa’l-tayyibaat. Al-salaamu ‘alayka ayyuha’l-Nabiyyu wa rahmat-Allaahi wa barakaatuhu. Al-salaamu ‘alayna wa ‘ala ‘ibaad-Illaah il-saaliheen. Ash-hadu an laa ilaaha ill-Allaah wa ash-hadu anna Muhammadan ‘abduhu wa rasooluhu (All compliments, prayers and pure words are due to Allaah. Peace be upon you, O Prophet, and the mercy and blessings of Allaah. Peace be upon us and upon the righteous slaves of Allaah. I bear witness that there is no god except Allaah, and I bear witness that Muhammad is the slave and Messenger of Allaah).” [Other versions are mentioned in Sifat Salaat al-Nabi/The Prophet’s Prayer Described, but what is mentioned here is the most sound].Sending salaams upon the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him): this is what was prescribed after the death of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), and is narrated in the Tashahhud of Ibn Mas’ood, ‘Aa’ishah and Ibn al-Zubayr (may Allah be pleased with them). For more details see Sifat Salaat al-Nabi, p. 

161, Maktabat al-Ma’aarif, Riyadh, edition/ The Prophet’s Prayer Described, p. 67).

 

145-        After that, he should send prayers upon the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), by saying: “Allaahumma salli ‘ala Muhammad wa ‘ala aali Muhammad kama salayta ‘ala Ibraaheem wa ‘ala aali Ibraaheem, innaka hameedun majeed. Allaahumma baarik ‘ala Muhammad wa ‘ala aali Muhammad kama baarakta ‘ala Ibraaheem wa ‘ala aali Ibraaheem, innak hameedun majeed (O Allaah, send prayers upon Muhammad and upon the family of Muhammad, as You sent prayers upon Ibraaheem and upon the family of Ibraaheem; You are indeed Worthy of Praise, Full of Glory. O Allaah, send blessings upon Muhammad and upon the family of Muhammad as You sent blessings upon Ibraaheem and upon the family of Ibraaheem); You are indeed Worthy of Praise, Full of Glory).”

 

146-        If you wish you may shorten it and say: “Allaahumma salli ‘ala Muhammad wa ‘ala aali Muhammad, wa baarik ‘ala Muhammad wa ‘ala aali Muhammad, kama salayta wa baarakta ‘ala Ibraaheem wa ‘ala aali Ibraaheem, innaka haamedun majeed (O Allaah, send prayers upon Muhammad and the family of Muhammad, and send blessings upon Muhammad and the family of Muhammad, as You sent prayers and blessings upon Ibraaheem and the family of Ibraaheem; You are indeed Worthy of Praise, Full of Glory).”

 

147-        Then in this Tashahhud he may choose any of the du’aa’s that he likes of those that have been narrated, and call upon Allaah using these words. The third and fourth rak’ahs

 148-        Then he says takbeer – which is obligatory. The Sunnah is to say takbeer whilst still sitting.

 

149-        He should raise his hands sometimes.

 

150-        Then he should stand up for the third rak’ah, which is an essential part of prayer, as is the following rak’ah.

 

151-        He should do likewise if he wants to get up for the fourth rak’ah.

 

152-        But before he gets up, he should sit up straight, by adjusting his left leg, until every bone returns to its place.

 

153-        Then he should get up, supporting himself on his hands, as he did when getting up for the second rak’ah.

 

154-        Then in the third and fourth rak’ahs, he should recite al-Faatihah. This is obligatory.

 

155-        He may add an aayah or more to that occasionally. Reciting Al-Qunoot when calamity strikes 

 

156-        It is Sunnah to recite Qunoot and pray for the Muslims when any disaster befalls them.

 

157-        Qunoot should be recited after standing up from rukoo’ and saying “Rabbunaa wa laka’l-hamd (Our Lord, to You be praise).”

 

158-        There is no specific du’aa’ to be recited regularly in Qunoot, rather one should recite whatever is appropriate when disaster strikes.

 

159-        He should raise his hands when reciting this du’aa’

 

160-        He should recite it aloud if he is acting an imaam.

 

161-        Those who are praying behind him should say “Ameen” to this du’aa’.

 

162-        When he has finished, he should say takbeer and prostrate. Qunoot al-Wit – when it is to be recited, and what wording it should have 

 

163-        Qunoot in Witr is prescribed occasionally.

 

164-        It should be recited before rukoo’, unlike qunoot recited at times of calamity.

 

165-        He should recite the following words:“Allaahumma ihdini feeman hadayta, wa ‘aafini feeman ‘aafayta, wa tawallani feeman tawallayta, wa baarik li feema a’tayta, wa qini sharra ma qadayta, fa innaka taqdi wa laa yuqdaa ‘alayk, wa innahu laa yadhillu man walayta, wa laa ya’izzu man ‘aadayta, tabaarakta rabbana wa ta’aalayta, wa laa manjaa minka illa ilayk(O Allaah, guide me amongst those whom You have guided; pardon me amongst those whom You have pardoned; turn to me in friendship amongst those to whom You have turned in friendship; bless me in what You have bestowed; save me from the evil of what You have decreed; for indeed You decree, and none can influence You; and he is not humiliated whom You have befriended; nor is he honoured whom You take as Your enemy. Blessed are You, O Lord, and exalted. There is no place of safety from You except towards You).”

 

166-        This du’aa’ was taught by the Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him), so it is permissible, because it was narrated from the Sahaabah (may Allaah be pleased with them).

 

167-        Then he should do rukoo’, and the two prostrations, as before. The final Tashahhud and placing the left foot under the right leg

 

168-        Then he should sit for the final Tashahhud. This is obligatory.

 

169-        He should do the same as in the first Tashahhud.

 

170-        But he should sit mutawarikan, which means placing the left foot under his right leg.

 

171-        He should put his right foot upright.

 

172-        It is also permissible to lay the right foot along the ground sometimes.

 

173-        He should cover his left knee with his left palm, leaning heavily on it. The obligation of sending prayers upon the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) and of seeking refuge with Allaah from four things 

 

174-        It is obligatory for him in this Tashahhud to send prayers upon the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), some versions of which we have quoted above when discussing the first Tashahhud.

 

175-        He should also seek refuge with Allaah from four things and say: “Allaahumma inni a’oodhu bika min ‘adhaab Jahannam wa min ‘adhaab al-qabri wa min fitnat il-mahyaa wa’l-mamaat, wa min sharri fitnat il-maseeh al-dajjaal (O Allaah, I seek refuge with You from the torment of Hell, from the torment of the grave, from the trials of life and death and from the evil of the tribulation of the Dajjaal).”The trials of life means the temptations of this world and its desires which a person faces in his life. The trials of death means the torment of the grave and the questioning of the two angels. The tribulation of the Dajjaal means the extraordinary feats that will be done at his hands, by which means people will be led astray, and they will follow him and believe his claim to be divine. Du’aa’ before the salaam 

 

176-        Then he may pray for himself as he sees fit, as narrated in the Qur’aan and Sunnah. There are many such good du’aa’s. If he does not know any such du’aa’s then he can say whatever is easy for him, for things that will benefit him in his religion and in his worldly affairs. Various kinds of tasleem (saying salaams) 

 

177-        Then he should say salaams to his right, which is an essential part of the prayer, turning his face so that the whiteness of his right cheek may be seen (from behind).

 

178-        Then he should say salaams to his left, turning his face so that the whiteness of his left cheek may be seen, even in the funeral prayer

 

179-        The imaam should raise his voice when saying salaam, except in the funeral prayer.

 

180-        The salaam takes various forms:

a.  “Al-Salaamu ‘alaykum wa rahmat-Allaahu wa barakaatuhu” to the right, and “Al-salaamu ‘alaaykum wa rahmat-Allaah” to the left.

 

b.  The same, but without saying “wa barakaatuhu”.

 

c.   “Al-Salaamu ‘alaykum wa rahmat-Allaahu” to the right, and “Al-salaamu ‘alaaykum” to the left.

 

d.   Saying one salaam, tilting the head slightly to the right. O my Muslim brother, this is what I was able to summarize from Sifat Salaat al-Nabi (peace and blessings of Allaah be upon him) [The Prophet’s Prayer Described], in an attempt to make it more accessible to you, so that it would be clear to you, as if you could see it with your own eyes. If you pray in the manner described to you of how the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), prayed, then I hope that Allaah will accept that from you, because by doing that you will have truly put into practice the words of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him): “Pray as you have seen me pray.” Moreover you must not forget the importance of presence of mind and humility in prayer, for this is the ultimate purpose of standing before Allaah in prayer. The more you can develop the attitude of humility and submission in prayer as described to you in the prayer of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), the more benefits you will reap, as indicated by our Lord when He said (interpretation of the meaning): “Verily, As‑Salaat (the prayer) prevents from Al‑Fahshaa’ (i.e. great sins of every kind, unlawful sexual intercourse) and Al‑Munkar (i.e. disbelief, polytheism, and every kind of evil wicked deed)”[al-‘Ankaboot 29:45]

 

 Finally, I ask Allaah to accept our prayer and all our good deeds, and to store up their reward until the Day when we meet Him: “The Day whereon neither wealth nor sons will avail,Except him who brings to Allaah a clean heart [clean from Shirk (polytheism) and Nifaaq (hypocrisy)]”[al-Shu’araa’ 26:88 – interpretation of the meaning] Praise be to Allaah, the Lord of the Worlds


I have become Muslim, al-hamdu-Lillaah, but I do not know Arabic. What should I do with regard to the adhkaar (phrases praising Allaah) in the prayer and reading Qur’aan in Arabic?

কোন মন্তব্য নেই:

Praise be to Allaah.


The majority of fuqaha’ say that if the non-Arab can speak Arabic, he should not recite Takbeer (saying “Allaahu akbar (Allaah is Most Great)”) in any other language. The evidence for this is that the texts instruct this particular wording, which is Arabic, and that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) did not do it any other way.


But if a non-Arab cannot speak Arabic and is unable to pronounce it, then according to the majority of fuqaha’ it is OK for him to say the Takbeer in his own language after it has been translated from Arabic, according to the statements of the Shaafa’is and Hanbalis, no matter what the language is. The Takbeer is remembrance or mentioning of Allaah, and Allaah can be remembered or mentioned in every language, so a language other than Arabic is an alternative, and the person has to learn how to say it in the other language. There is some controversy as to whether all of the adhkaar of the prayer, such as tashahhud, qunoot, du’aa’, and the tasbeehaat in rukoo’ and sujood may be said in languages other than Arabic.


With regard to reading Qur’aan, the majority say that it is not permissible to read it in any language other than Arabic. The evidence for this is the aayah (interpretation of the meaning):“Verily, We have sent it down as an Arabic Qur’aan…” [Yoosuf 12:2]Moreover, the Qur’aan is a miracle in its wording and its meaning; if it is changed, this is no longer the case, and it is no longer Qur’aan but an interpretation (tafseer). (al-Mawsoo’ah al-Fiqhiyyah, part 5: A’jami)


Ibn Qudaamah (may Allaah have mercy on him) said:“Section: It is not right to read it in any language other than Arabic, or to substitute other words in Arabic, whether the person can read it well in Arabic or not, because Allaah says (interpretation of the meaning): “…an Arabic Qur’aan …’ [Yoosuf 12:2] and ‘In the plain Arabic language’ [al-Shu’ara’ 26:195]. The Qur’aan is a miracle in both its wording and its meaning, but if it is changed this is no longer the case, it is not Qur’aan or anything like it. It is only an interpretation (tafseer), and if the interpretation were like the Qur’aan itself, they would not be unable to meet the challenge of producing a soorah like it.



If a person cannot read well in Arabic, he has to learn. If he does not learn when he is able to, his prayers are not valid. If he is not able, or he fears that he does not have time to learn before the time for the next prayer is over, and he knows one aayah of al-Faatihah, he should repeat it seven times… If he can recite more than that, he should repeat it as much as he needs to make his recitation equivalent to the length of Soorat al-Fatihah, or he could make it up by reciting other aayaat. If he knows some aayaat he does not have to repeat, he could recite another aayah instead, because the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) commanded the one who could not recite Qur’aan well to say ‘Al-Hamdu Lillaah (Praise be to Allaah)’ and other phrases, which is part of an aayah, but he did not command him to repeat it. If he cannot do anything, but he knows some of the Qur’aan by heart, he should recite whatever he can, and nothing else will do, because of the report narrated by Abu Dawood from Rifaa’ah ibn Raafi’, who said that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “When you get up to pray, if you know some Qur’aan, recite it, otherwise say al-hamdu Lillaah (praise be to Allaah), and La ilaaha ill-Allaah (there is no god but Allaah), and Allaahu akbar (Allaah is Most Great).” This is more like Qur’aan, and is more appropriate (than any other words). He should also recite as much as he needs to make it equivalent in length to Soorat al-Faatihah. If he cannot recite anything of the Qur’aan, and cannot learn before it is too late to pray the current prayer, he should say Subhaan Allaah wa’l-hamdu Lillaah wa Laa ilaaha ill-Allaah wa Allaahu akbar wa Laa hawla wa laa quwwata illa Billaah (Glory be to Allaah; praise be to Allaah; there is no god but Allaah; Allaah is Most Great; and there is no strength and no power except with Allaah). Abu Dawood reported that a man came to the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) and said: “I cannot learn anything of the Qur’aan. Teach me something that will suffice me.” He said, “Say Subhaan Allaah wa’l-hamdu Lillaah wa Laa ilaaha ill-Allaah wa Allaahu akbar wa Laa hawla wa laa quwwata illa Billaah.”And Allaah knows best. 


I have committed many sins which no one knows of except Allaah. What do I have to do so that Allaah will accept my repentance?

কোন মন্তব্য নেই:

Praise be to Allaah.A Muslim’s faith may become weak and he may be overwhelmed by his desires. The Shaytaan may make sin attractive to him, so he wrongs himself (commits sin) and falls into that which Allaah has forbidden. But Allaah is Kind to His slaves, and His mercy encompasses all things. Whoever repents after doing wrong, Allaah will accept his repentance, for Allaah is Forgiving and Merciful. “But whosoever repents after his crime and does righteous good deeds (by obeying Allaah), then verily, Allaah will pardon him (accept his repentance). Verily, Allaah is Oft Forgiving, Most Merciful [al-Maa’idah 5:39 – interpretation of the meaning]  Allaah is Forgiving and Generous. He commands all His slaves to repent sincerely so that they may gain the mercy of Allaah and His Paradise. Allaah says (interpretation of the meaning):  “O you who believe! Turn to Allaah with sincere repentance! It may be that your Lord will expiate from you your sins, and admit you into Gardens under which rivers flow (Paradise)” [al-Tahreem 66:8]  The gate of repentance is open to His slaves, until the sun rises from the west. The Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “Allaah spreads out His Hand at night to accept the repentance of those who did wrong during the day, and He spreads out His Hand during the day to accept the repentance of those who did wrong during the night. (This will continue) until the sun rises from the west.” (Narrated by Muslim, no. 2759) Sincere repentance is not merely the matter of words spoken on the tongue. Rather, the acceptance of repentance is subject to the condition that the person gives up the sin straight away, that he regrets what has happened in the past, that he resolves not to go back to the thing he has repented from, that he restores people’s rights or property if his sin involved wrongdoing towards others, and that he repents before the agony of death is upon him. Allaah says (interpretation of the meaning): “Allaah accepts only the repentance of those who do evil in ignorance and foolishness and repent soon afterwards; it is they whom Allaah will forgive and Allaah is Ever All-Knower, All-Wise.And of no effect is the repentance of those who continue to do evil deeds until death faces one of them and he says: ‘Now I repent;’ nor of those who die while they are disbelievers. For them We have prepared a painful torment” [al-Nisaa’ 4:17-18] Allaah accepts repentance and is Merciful. He calls sinners to repent, so that He might forgive them: “…your Lord has written (prescribed) Mercy for Himself, so that if any of you does evil in ignorance, and thereafter repents and does righteous good deeds (by obeying Allaah), then surely, He is Oft-Forgiving, Most Merciful” [al-An’aam 6:54 – interpretation of the meaning]  Allaah is Kind to His slaves and loves those who repent. He accepts their repentance, as Allaah says (interpretation of the meaning): “And He it is Who accepts repentance from His slaves, and forgives sins, and He knows what you do”[al-Shooraa 42:25] “Truly, Allaah loves those who turn unto Him in repentance and loves those who purify themselves”[al-Baqarah 2:222] When a kaafir becomes a Muslim, Allaah turns his bad deeds (sayi’aat) into good deeds (hasanaat), and forgives him all his previous sins, as He says (interpretation of the meaning): “Say to those who have disbelieved, if they cease (from disbelief), their past will be forgiven” [al-Anfaal 8:38] Allaah is Forgiving and Merciful, and He loves the repentance of His slaves. He commands them to repent so that He might forgive them. But the devils among mankind and the jinn want to turn people away from the truth and make them incline towards falsehood, as Allaah says (interpretation of the meaning): “Allaah wishes to accept your repentance, but those who follow their lusts, wish that you (believers) should deviate tremendously away (from the Right Path) [al-Nisaa’4:27] The mercy of Allaah encompasses all things. If a person’s sins are very great and he has wronged himself very much, but he then repents, Allaah will accept his repentance and will forgive his sins no matter how great they are. Allaah says (interpretation of the meaning): “Say: O ‘Ibaadi (My slaves) who have transgressed against themselves (by committing evil deeds and sins)! Despair not of the Mercy of Allaah, verily, Allaah forgives all sins. Truly, He is Oft-Forgiving, Most Merciful”[al-Zumar 39:53] The Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “Our Lord comes down to the lowest heaven when one-third of the night remains, and says, ‘Who will call upon Me so that I may answer him? Who will ask Me so that I may give to him? Who will seek My forgiveness so that I may forgive him?’” (Narrated by Muslim, no. 758) Man is weak. If a person sins then he has to repent and seek forgiveness every time. Allaah is Forgiving and Merciful, and He is the One Who says (interpretation of the meaning): “And whoever does evil or wrongs himself but afterwards seeks Allaah’s forgiveness, he will find Allaah Oft Forgiving, Most Merciful” [al-Nisaa’ 4:110] The Muslim is vulnerable to making mistakes and sins. So he has to repent and seek forgiveness repeatedly. The Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “By Allaah, I seek the forgiveness of Allaah and I turn to Him in repentance more than seventy times each day.” (Narrated by al-Bukhaari, no. 6307) Allaah loves the repentance of His slaves, and accept it. Indeed, He rejoices over it, as the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) said: “When a person repents, Allaah rejoices more than one of you who found his camel after he lost it in the desert.” (Agreed upon. Narrated by al-Bukhaari, no. 6309) 


 
back to top